আপনি সুস্থ কিনা এর একটি চট জলদি নির্দেশিকা হল কোমরের মাপ। এর মাধ্যমে জানতে পারবেন আপনার দেহ যন্ত্রের চারপাশে ও এর গভীরে কেমন জমেছে মেদ। দেহে মেদ হলে ভাল না। কিন্তু উদরের গভীরে মেদ হলে বিপদ, অনেক গুরুতর অসুখের হাতছানি। দেহের অন্ত্র যন্ত্রের চারপাশের মেদ ভাঙ্গলে নিঃসৃত হয় ফ্যাটি এসিড যা হার্টের রোগ, আলঝাইমার আর হাই কোলেস্টেরলের ঝুঁকি বাড়ে। শরীর ইন্সুলিনের প্রতি রেজিসটেন্ট হয় আর ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে। অন্ত্র যন্ত্রের মেদ থেকে আসা প্রোটিন প্রদাহ বাড়ায়, সরু করে রক্ত নালী আর বাড়ায় রক্ত চাপ।
কত বড় হলে বড়? সাধারণত আমরা বলি নারীর কোমর ৩৫ ইঞ্চির বেশি হলে আর পুরুষের কোমর ৪০ ইঞ্চির বেশি হলে বিপদ। তবে এশিয়ানদের জন্য পুরুষের ক্ষেত্রে ৩৫.৫ এর বেশি আর নারীর ক্ষেত্রে ৩১.৫ ইঞ্চির বেশি হবে না। তবে কোমরে শরীরে চর্বি থল থল করলে ভেতরে অন্ত্র যন্ত্রের মেদ বোঝায় না। সুমু কুস্তিগির দের শরীরে মেদ থল থল, এদের বিশাল কোমর আর হাই বি এম আই। কিন্তু উদরের অভ্যন্তরে ফ্যাট কম। এরা দারুন স্বাস্থ্যের অধিকারী। স্থূল কোমর তাহলে কি ক্ষীণ কোমরের চেয়ে ভাল? অনেকের কোমর পাতলা কিন্তু অন্ত্র যন্ত্রে বেশ মেদ। ডাক্তাররা একে বলেন TOFI THIN OUTSIDE FAT INSIDE।
কোমর বড় হলে প্রধান যে সমস্যা তা হল মেটাবলিক সিনড্রোম। আরও থাকতে পারে উঁচু মানের ট্রাইগ্লিসারাইড, কোলেস্টেরল, সুগার আর রক্ত চাপ। এর যে কোন একটি বিপদের ইংগিত। এদের মধ্যে তিনটি বা বেশি একত্রে থাকলে হয় মেটাবলিক সিনড্রোম আর এটি থাকলে হতে পারে হার্টের রোগ, ডায়াবেটিস ও স্ট্রোক। আরেকটি মাপ হল কোমর ও নিতম্ব অনুপাত। কোমরের মাপকে নিতম্বের মাপ দিয়ে ভাগ করলে যা পাওয়া যায়। নারীদের ক্ষেত্রে ০.৮৫ এর বেশি হলে আর পুরুষের ক্ষেত্রে ০.৯৫ এর বেশি হলে বিপদ। বডি মাস ইনডেক্স বা বি এম আই হল অন্ত্র যন্ত্রের মেদ মাপার আর এক উপায়। উচ্চতা আর ওজন জানলে অনলাইন থেকে জানা যায়। ক্ষীণ মাপের লোকের ১৮.৫ থেকে বিশাল দেহি লোকের ২৪.৫।
এশিয়ানদের বি এম আই ২৩ হলে নজর দিতে হবে। কারণ নিম্ন বি এম আই হলেও এদের অন্ত্র যন্ত্রে মেদ বেশ থাকতে পারে।
মাপবেন ঠিক মত। শিথিল দাঁড়ান। মাপার টেপ কোমরে হিপ বোনের উপর দিয়ে নাভি বরাবর মাপুন। আপনাকে হতে হবে নাশপাতি আকৃতি, আপেল আকৃতি নয়।ব্যায়াম করুন। যেমন প্রতিদিন আধ ঘণ্টা দ্রুত হাঁটা, পুশ আপ, উঠ বস, ভার উত্তোলন ও ইয়গা। খাবেন প্রচুর ফল সবজি, হোল গ্রেন, দধি, প্রচুর পানি, মাছ আর কচি মাংস। ট্র্যান্স ফ্যাট, ফ্যাটি খাবার, তেল, কোমল পানীয় ও ফাস্টফুড বাদ দিতে হবে।