কার্ডিয়াক এরেস্ট হয় যখন হঠাৎ হৃদযন্ত্র স্পন্দিত হওয়া বন্ধ করে দিল। নাড়ি নাই তাই পর্যাপ্ত রক্ত চলাচল নাই, মগজ আর শরীর অক্সিজেন পায় না। তাই ডাকতে হবে তখন ৯১১ আর পারলে সিপিআর শুরু করা। এ কিন্তু জীবন সংশয়ী জরুরি পরিস্থিতি।
লক্ষণ উপসর্গ জানা ভাল
- দ্রুত চেতনা লোপ
- পতন
- শ্বাস বন্ধ
- নাড়ি বন্ধ
- ঘটার আগেই মাথা ঝিম ঝিম , মাথা হাল্কা লাগা
- বুক ব্যাথা, অসুস্থ ভাব, শ্বাস কষ্ট
- হার্ট বন্ধ হবার আগে দ্রুত স্পন্দন
তবে সতর্ক সঙ্কেত ছাড়াই হতে পারে কার্ডিয়াক এরেস্ট।
কী হয় তাহলে?
- হার্ট চলে বিদ্যুতে। সমস্যা হতে পারে যাতে বিদ্যুৎ সংকেতে হয় জট হয় এলোমেলো। এমন সব ত্রুটিতে হয় হার্টের স্পন্দনে অনিয়ম, এর নাম এরিদমিয়া (arrhythmia)। সব রকমের এরিদমিয়া ক্ষতিকর হয় কিন্তু ভেনট্রিকুলার এরিদমিয়া বেশ বিপজ্জনক আর এটি ঘটাতে পারে কার্ডিয়াক এরেস্ট।
- এর সম্পর্ক আছে হৃদরোগের সাথে বেশির ভাগ মানুষ যাদের কার্ডিয়াক এরেস্ট হয় এদের থাকে করোনারি ধমনী রোগ বা ইস্কিমিক হার্ট ডিজিজ (ischemic heart disease)।
- ধমনীর ভেতরে যে চর্বিপুঞ্জ জমে তা রোধ করতে পারে রক্তের প্রবাহ আর হার্টে রক্তের চলাচল রোধ বা ধীর করতে পারে। তা থেকে হার্ট এটাক আর যা হৃদ কোষের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা লণ্ডভণ্ড করে দেয়।
অন্যান্য কারণ
অন্য কারণ থাকতে পারে। এরিদমিয়া হল সূচনা।
- এমন হবার জিনগত ভিত্তি থাকতে পারে
- বড় রকমের রক্ত ক্ষয় বা অক্সিজেন ঘাটতি
- হৃদ অসুখ নিয়েও কঠোর শরীর চর্চা
- জন্মগত হার্টের ত্রুটি
- রক্তের খুব কম পটাশিয়াম বা ম্যাগনেসিয়াম
কাদের আছে কার্ডিয়াক এরেস্টের ঝুঁকি
- এরিদমিয়ার ব্যক্তিগত বা পারিবারিক ইতিহাস
- বৃদ্ধ পুরুষ
- ধূমপায়ী, নেশাখোর বা মদ্যপায়ী
- আগে দু-এক বার হার্ট এটাক হয়েছে
- আছে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হার্ট ফেইলিউর বা কিডনি ডিজিজ
- স্থূল আর শরীর চর্চা করা হয় না
- তীব্র আবেগ
- হটাত তীব্র আবেগ, রাগের প্রকাশ ঘটাতে পারে হৃদ ছন্দে অনিয়ম বা এরিদমিয়া।
চিকিৎসা
চিকিৎসা চাই চট জলদি না হলে মৃত্যু হতে পারে।
- সময় মত পেলে ডিফিব্রিলেটার দিয়ে শক আর আসতে পারে ফিরে হৃদ ছন্দ
- আছে অটোমেটিক এক্সটারনাল ডিফিব্রিলেটার
- সিপিআর সাহায্য না আসা পর্যন্ত ডাকুন ৯১১
হাসপাতালে সময় মত এলে প্রাণ বাঁচতে পারে
- এরপর কার্ডিওলজিস্টের সাথে বসে পরামর্শ নেয়া পরের জীবন কিভাবে চালাতে হবে ওষুধ, জীবন শৈলী, প্রয়োজনে রক্ত পরীক্ষা
- কার্ডিয়াক এরেস্টের সম্ভাবনা বোঝার জন্য কিছু টেস্ট
- ইকেজি, ইলেকট্রকারডিওগ্রাম হার্টের তড়িৎ কাজকর্মের পরীক্ষা
- ইকোকার্ডিওগ্রাম: শব্দ ব্যবহার করে হার্টের ক্ষতির অবস্থান আর দুর্বল রক্ত প্রবাহ শনাক্ত
- কার্ডিয়াক এমআরআই: চুম্বক আর রেডিও তরঙ্গ ব্যবহার করে স্পন্দিত হার্টের বিশদ ছবি
প্রতিরোধ
১। ডায়েট দিয়ে শুরু
আমরা হার্ট এটাক প্রতিরোধ সম্পূর্ণ ভাবে না করতে পারলেও আমরা হার্ট এটাক হবার সম্ভাবনা কমাতে পারি।
- সুষম খাদ্য আর এতে থাকবে না বা খুব কম থাকবে চিনি, নুন আর প্রসেস করা খাবার।
- প্রচুর সবজি, ফল, হেলদি ফ্যাট, হোল গ্রেন, লিন মিট
- DASH ডায়েট সব চেয়ে ভাল
২। নিয়মিত ব্যায়াম
- অন্তত ১৫০ মিনিট হাঁটুন সপ্তাহে, প্রতি দিন আধ ঘণ্টা, ৫ দিন
- স্ট্রেস কমাবার জন্য শিথিল হবার চর্চা, ব্রিদিং, প্রানায়াম, ইয়গা