কালো জাম আমার ছোটবেলায় খুব প্রিয় হয়েছে, আমি যখন খুব ছোট পড়ি শান্তিনিকেতনে পাঠ ভবনে আমাদের বাসার সামনে ছিল জাম গাছ আর তাই প্রায় জাম খাওয়া হত আর একটু দূরে ছিল আমলকী বন তাই আমলকীও খাওয়া হত। এখন আর সে সব নেই।
এই মৌসুমে আম কাঁঠাল বেশি খেতে পারেন না (!) খাবেন কালো জাম। রজাসি (Rosaceae) পরিবারের এই ফল এর ওষুধি গুণের জন্য পরিচত ২০০০ বছর ধরে। এই ফল, এর পাতা, গাছের বাকল, শিকড় রোমান আর গ্রীকরা ব্যবহার করত ওষুধ হিসাবে। সামান্য সংক্রমণ থেকে বিষাক্ত কিছুর কামড়ের জন্য। অষ্টাদশ দশকে গেটে গেঁটে বাত বা গাউট সারাতে গ্রীকদের এই জাম দিয়ে চিকিৎসা ইউরোপে এত জনপ্রিয় হল যে তখন একে বলা হত ‘গাউট বেরি’। এর চিকিৎসা ক্ষেত্রে সম্ভাবনা নিয়ে খোঁজ চলছে।
এর দশটি স্বাস্থ্য হিত আছে
১। এতে আছে প্রচুর আঁশ। এক কাপ কালো জামে আছে ৭.৬ গ্রামের বেশি আঁশ। আঁশ পেট ভরাট রাখে তাই অস্বাস্থ্যকর স্ন্যাক্স খাওয়া বারণ হয়, হজমেও সুবিধা হয়।
২। আছে অনেক এন্টিঅক্সিডেন্ট
এন্টিঅক্সিডেন্ট দেহ সুরক্ষা করে। আছে অনেক ফ্ল্যাভনয়েড, ফেনলিক এসিড ফ্লেভনলস , আন্থসায়ানোসাইডস এরা শরীরে প্রস্তুত ক্ষতিকর অক্সিজেন মুক্ত অণুর বিরুদ্ধে কাজ করে ।
৩। বাড়ায় মগজের শক্তি, এমনকি বুদ্ধিবৃত্তিক আর চলন ক্ষমতা। বয়স্ক লোকের জন্য ভাল বজায় রাখে ভারসাম্য। বয়স হলে বুদ্ধিবৃত্তি আর চলনকে বজায় রাখে।
৪। মুখের স্বাস্থ্য ভাল রাখে
জাম খেলে মুখের জীবাণু নাশ হয়। এতে আছে গ্যালিক এসিড, রিউটিন (Rutin), এলাগিক এসিড (Ellagic Acid)। এর আছে জীবাণুরোধী গুণ।
৫। ক্যান্সাররোধী গুণ
এর এনটিঅক্সিডেন্ট গুণাগুণ ক্যান্সার প্রতিরোধে সুফলা, আছে অ্যান্থসায়ানিন (Anthocyanin) আর এলাগিক এসিড।
৬। সুস্থ হার্ট
ফ্ল্যাভনলের অ্যান্থসায়ানিন সুরক্ষা করে হার্ট আছে। প্রচুর ম্যাগেনেসিয়াম রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণ আর ধমনীর দেয়াল ভেতর মসৃণ রাখতে।
৭। ইমিউনিটি উজ্জীবক
আছে ফাইটো ইস্ট্রোজেন , ভিটামিন আর খনিজ। ইমিউনিটি উজ্জীবিত করে।
৮। স্বাস্থ্যকর ওজন অর্জনে
এতে আছে অনেক আঁশ আর সুগার খুব কম , তাই সুস্থ ওজনে সহায়ক।
৯। সুস্থ হাড়
কালো জামে ক্যালসিয়াম আর ম্যাগনেসিয়াম সুস্থ হাড় বজায় রাখে।
১০। রক্ত জমাট বাঁধা
আছে ভিটামিন কে, রক্তের স্বাভাবিক ক্লটিং বজায় রাখে।