মানুষের অভিজ্ঞতা এমন নানা রকমের আবেগ হয় মনে, জীবনের বেদনা আর দুখের অভিজ্ঞতার জন্য এমন আবেগ হওয়া স্বাভাবিক এতে শরমের কিছু নাই।
কিন্তু কারো কারো আবেগ সম্পর্কের অবনতি ঘটাচ্ছে , কেউ আবগে আচ্ছন্ন হচ্ছেন এগুলো অতিরিক্ত বলা যাবে ।
আবেগ নিয়ন্ত্রণের বাইরে হলে অন্তর্নিহিত কারন থাকতে পারে।
১। আঘাত পাওয়া আর এর পরবর্তী অসুখ ।
যেমন একজন যিনি ধর্ষণের / নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন, তিনি এই অপরাধিদের চেহারার মত লোক দেখলে তার প্রতিক্রিয়া হয়, আর নির্যাতন সম্বন্ধে নিউজ স্টোরি দেখে ক্রোধ হতে পারে।
ন্যাশন্যাল সেন্টার ফর পি টি এস ডি বলেন, এমন আঘাতের স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া হল ক্রোধ । ইরাক আর আফগানিস্থান থেকে ফিরে আসা সেনারা নিজেদের সঙ্গিদের আর পরিবারের সদস্যদের হত্যা পর্যন্ত করেছেন। ট্রমা উত্তর স্ট্রেস এর এমন আরও অসংখ্য উদাহরন আছে।
২। মানসিক অসুখের জন্য হতে পারে প্রচণ্ড আবেগ।
যেমন বিষণ্ণতা একজনকে গভীর দুঃখী বা ক্রুদ্ধ করতে পারে। দেখা গেছে পুরুষরা নারীদের তুলনায় বিষণ্ণ হলে বেশি ক্রোধ প্রকাশ করে।
হতে পারে বাইপোলার বৈকল্য এমন্ অসুখ তখন তীব্র বিষণ্ণতা আর তীব্র হর্ষের দোলাচল চলতে থাকে। আর দুশ্চিন্তা মানুষকে করে ভীত আর প্রতিক্রিয়া শীল ।
৩। হরমোন অদল বদল ।
যেমন থাইরয়েড গ্রন্থির কাজ কমে গেলে (হাইপো থাইরয়েড ) ৬০% রোগীর হয় বিষণ্ণতা । থাইরয়েড এর হরমোন মাত্রা তখন কমে।
গর্ভ সঞ্চার, ঋতু বন্ধ , বয়সন্ধি প্রভাব ফেলে আবেগের উপর।
মেয়েদের ঋতু কালিন মেজাজের চড়াই উৎরাই হয়।
৪। সামাজিকতা আর সাংস্কৃতিক আবহ।
বিশেষ সাংস্কৃতিক পরিবেশে আবেগের প্রকাশ হয় ভিন্ন ভিন্ন।
নারি আর পুরুষের আবেগ প্রকাশের সামাজিক আচার আর নিয়ম হয় ভিন্ন। ছেলেরা যেমন ক্রোধ প্রকাশ করতে সমাজে যেমন উৎসাহিত করা হয়্ , অথচ নারিদের কে আবেগ দমন করতে শেখানো হয়। পুরুষ প্রধান সমাজের এই নিয়ম এখনো বদলায়নি। সে জোনয় পুরুষ ক্রোধকে সবাভাবিক মনে করে একে আবেগ বা ইমশন মনে করেনা।
জেন্ডার আর সমাজের মানুষের আবেগ এর ব্যখ্যা করার ধরনও ভিন্ন।
তাই আবেগ থাকলে দেখতে হবে অতিরিক্ত কিনা কারো ক্ষতি করছে কিনা সমাজে সংস্কৃতির সাথে মানান সই কিনা।
৫। শারীরিক সমস্যা।
যেমন প্রচণ্ড ব্যাথা ক্রনিক হয়ে গেছে। এ ধরনের ডিমেন শিয়া হলে হয় এমন মুড শিফট ।
৬। অপূর্ণ দৈহিক চাহিদা ।
মন আর শরীরে র মধ্যে তফাত নেই । এরা এক সুত্রে বাধা।
রক্ত সুগার এর উঠা নামা , ডায়েবেটিস অনিয়ন্ত্রিত হলে অতি ক্ষুধা , মেজাজে পরিবর্তন এমন হতে পারে। অতিরিক্ত ক্লান্তি , কারন । আজকাল ডাক্তার রা করোনা রোগীদের চিকিৎসায় এমন চাপে আছেন তাদের অনেকের বার্ন আউট হচ্ছে । ক্লান্ত , ভারাক্রান্ত আর পরিশ্রান্ত হয়ে ধসে পড়ছেন আর তাদের দেখ ভাল তাদের প্রতি সদয় বিচার না থাকাতে তাদের চাপ , অবসাদ বাড়ছে আর দুশ্চিন্তা তাদের উপর ভর করছে , পরিবারের চিন্তা কম হচ্ছেনা ।
৭।কিছু হয়নি এমন এক ধারনা দেয়া।
Gas lighting বলে একটা কথা আছে , আপনার কিছু নাই হয়নি এমন এক ধারনা দেয়া অনেক সময় ক্ষতিকর। অতিরিক্ত্র আবেগ আছে এমন লোকদের অনেক সময় এমন প্রবোধ দেয়া যে তাদের অভিজ্ঞতার অবমূল্যায়ন করা আর স্ট্রেস এর গুরুত্ব অনুধাবন না করা। নারিদের ব্যাপারে এটি করা হয় তাদের আবেগ অনেক সময় তেমন কিছু না বলা,।
দেখা গেছে নারি আর পুরুষের প্রতি বিচার বিবেচনা ভিন্ন , ক্রনিক ব্যাথা সহ্য করাকে বলে পুরুষ বেশ সাহসী আর নারীদের বলা হচ্ছে বেশি ইমশন ।অনেক সমাজে অতিরিক্ত ক্রোধ কে অতি আবেগ না দেখে বরং অত দুঃখকে বলা হচ্ছে অতি আবেগ।
৮। স্ট্রেস ।
যাদের স্ট্রেস তাদের মুড শিফট বেশি আর আবেগ বেশি
তারা একে মোকাবেলার কৌশল প্রয়োগে সফল হন না। এরা আচ্ছন্ন হয়ে পড়ছেন । দৈহিক চাহিদা তুচ্ছ করেন।
এর পর এদের ঘুম হয়না ভাল। প্রিয়জনের সাথে হয় দ্বন্দ্ব , সংঘাত । মনে তাগিদ বা মোটিভেশন পান না। ব্যথা বেদনা সহচর হয়। নিজে নিজের খেয়াল নিতে পারেন না।
অবশ্য এজন্য মনো চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।