প্রিয়জনের হয়ত ডায়াবেটিস ধরা পড়েছে কি খাবেন তিনি কি খাবেন না এসব নিয়ে কিছু ধারনা অনেক সময় হচ্ছে ভুল। আবার খাদ্য , পুষ্টি হল ডায়াবেটিস মোকাবেলার জন্য এ ক গুরুত্ব পূর্ণ চালক। ডায়াবেটিস নিয়ে ৭টি ভুল ধারণা
১। ডায়াবেটিস হয় বেশি মিষ্টি খেলে।
ডায়াবেটিস একটি জটিল রোগ নানা কারন জানা অজানা আছে এর পেছনে । তাই টাইপ ১ আর ২ ডায়াবেটিস হয় চিনি বেশি খেলে তা নয় , টাইপ ১ ডায়াবেটিস একটি অটো ইম্মুন রোগ , ধ্বংস হয় অগ্ন্যাশয়ের বিটা কোষ । এর পেছনে ডায়েট বা জীবন শৈলীর অবদান নেই।
টাইপ ২ ডায়াবেটিস সরাসরি চিনি বা মিষ্টির কারনে হয়না তবে সুগার ভরপুর খাবার যেমন মিষ্টি , সুগার পানীয় এসব বেশি খেলে ওজন বাড়ে যা ডায়াবেটিসের এক ঝুকি বলেন আমেরিকান ডায়াবেটিক সমিতি
এছাড়াঅন্যান্য ঝুকি হল
স্থুলতা
উচ্চ রক্তচাপ
নিষ্ক্রিয় জীবন
৪৫ ঊর্ধ্ব
২। ডায়াবেটিসের ওষুধ খেলে যা ইচ্ছে খেতে পারেন,।
এলকোহল আর অন্যান্য পানীয়
ডায়াবেটিসের জন্য প্রয়োজনে প্রেসক্রিপশন ওষুধ জরুরী তবে এর জন্য যা ইচ্ছে খাবার সবুজ সঙ্কেত দেওয়া হয়না। লিন প্রোটিন , তাজা ফল সবজি আর জটিল শর্করা হল একে নিয়ন্ত্রনের উপায়। এর অগ্রগতি ধীর করা আর জটিলতা রোধের জন্য প্রয়োজনীয় ।
ভুল খাবার আর পানীয় গ্রহন যেমন চর্বি বহুল খাবার ফাস্ট ফু ড , সুগার ড্রিংক এসব পান করলে ওষুধের গুনও বরং নষ্ট হয়। তাই মখে খাবার ওষুধ হোক , ইন্সুলিন ইনজেকশন হোক ডায়াবেটিক ডায়েট খেতেই হবে।
৩। এলকোহল আর অন্যান্য পানীয় সীমা আর বর্জন
যে সব দেশে এলকোহল পানীয় তারা ডায়াবেটিক হলে সামান্য এলকোহল গ্রহন করতে পারেন নারিদের জন্য ১ টি পুরুষের ২ টি , অবশ্য যাদের ডায়াবেটিস ভাল নিয়ন্ত্রনে।
চিনি পানীয় , কোমল পানিয় বর্জন করা ভাল। এলকোহল না পান করলে আরও ভাল।
৪। সব শর্করা ডায়াবেটিসের জন্য খারাপ।
শ্বেতসার সমৃদ্ধ স্টার্চি খাবার যেমন ভাত, পাস্তা , রুটি , আলু , স্টার্চ সমৃদ্ধ সব্জি খেলে পরিপাকের পর তা গ্লুকজে রুপান্তরিত হয় তাই এদের সীমিত আর পরিমিত আহারের কথা বলা হয়। এর মানে এই নয় আপনার খাদ্যে এসব সম্পূর্ণ বর্জন করবেন।
এছাড়া এদের অনেক খাবারে থাকে হিতকর পুষ্টি আর আঁশ । সব চেয়ে ভাল হল এমন শর্করা বেছে নেওয়া যাদের আছে লো গ্লাইসিমিক সুচক।
গ্লাইসিমিক সুচকের মানে শর্করা আছে এমন খাদ্য কত দ্রুত বাড়ায় রক্তের সুগার।
সাধারন ভাবে প্রসেস করা খাবার যেমন ময়দার রুটি , বেকারি খাবার, সাদা চাল আর চট জলদি ওটস । এদের জি আই ( গ্লাইসিমিক ইন ডেক্স)উচু।
হোল গ্রেন , শুষ্ক বিনস , লো স্টার্চ সবজি যেমন টম্যাটো , ব্রকলি এসব সবজি লো জি আই। আসলে আপনার খাবার প্লেটে মাত্র এক চতুর্থাংশ জুড়ে থাকবে শর্করা , তাহলে হবে ভাল ব্যালেন্স।
৫। ডায়াবেটিস মানে ফল খাওয়া যাবেনা ।
একেবারে ভুল ধারনা ,। নিষিদ্ধ এমন ফল নাই , সীমিত হতে পারে। বরং গোটা ফল খেলে ভাল । সব্জির মত ফলেও আছে ভিটামিন , খনিজ আর আঁশ । হেলদি মিল প্লান করার জন্য এদের দরকার। আপেল , জাম , পেয়ারা , কুল , আমলকী , লেবু , আমড়া , জাম্বুরা , বাঙ্গি নাশপাতি এসব খেতে পারেন প্রতিদিন।
৬। ডায়াবেটিস হয়ে গেলে জীবনে আর মিষ্টি ছোঁবেন না।
জন্মদিনে এক চামচ পায়েশ , ছোট এক টুকরা কেক, ছেলে বা মেয়ের দারুন ফলাফলে আনন্দে এক টুকরো মিষ্টি খেতেই পারেন সব সুগার, এতে কত আর বাড়বে সুগার। কিন্তু নিজেকে বঞ্চিত করা কেন তবে প্রশ্রয় নিজকে দিতে গিয়ে প্রমোদে মন ঢালা যাবেনা , সংযম আর শৃঙ্খলা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনের চাবিকাঠি ।
৭। সব সুগার বিকল্প হেলদি ।
কৃত্রিম মিষ্টক যেমন স্যাকারিন , আস্পার টাম , স্তেভিয়া মনে হতে পারে সুগারের সহজ বিকল্প কিন্তু এদের নিয়ে আছে বিতর্ক , । সুগার ফ্রি বিকল্প নিয়েও আছে দ্বৈত মত। তাই এড়ানোই ভাল।
