ওভারি (ovary) বা ডিম্বাশয় নারী শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংগ। নিয়মিত হরমোন উৎপাদন এবং খতুস্রাবের জন্য ডিম্বাণু (ovum) তৈরি করে নারী শরীরকে স্বাভাবিক রাখে। কিন্তু যখনই রোগাক্রান্ত হয় তখনই নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। তার মধ্যে ডিম্বাশয়ের ক্যানসার অন্যতম। ডিম্বাশয়ের ক্যানসার বর্তমানে পঞ্চম স্থানে আছে ক্যানসার হওয়ার প্রবণতার দিক থেকে। যেকোন বয়সের নারীরা আক্রান্ত হতে পারেন।
ডিম্বাশয়ের ক্যানসারে কারা আছেন উচ্চ ঝুঁকিতে?
১) বয়স ৪০-৬০ মানে পিরিয়ড বন্ধ হওয়ার পর ওভারিয়ান ক্যানসারের প্রবণতা বেশি
২) বন্ধ্যা নারীরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকে
৩) যাদের পিরিয়ড আগে শুরু হয়ে দেরিতে বন্ধ হয়
৪) পরিবারে কারো ব্রেস্ট, ওভারিয়ান, বা এনডেমেট্রিয়াল ক্যানসারের ইতিহাস থাকলে
৫) জিনগত সমস্যা থাকলে ইত্যাদি
এই ক্যানসারে আক্রান্ত নারীরা সবচেয়ে বেশি মৃত্যুঝুঁকিতে থাকেন অন্য সব গাইনেকোলজিক্যাল ক্যানসার থেকে।
ডিম্বাশয়ের ক্যানসারের লক্ষণের মধ্যে রয়েছে
১) পেটে চাকা অনুভব হওয়া
২) পেট ফুলে যাওয়া এবং পেট ভারী ভারী অনুভূত হওয়া
৩) ক্ষুধামন্দা হওয়া এবং খাওয়ার পর পেট অস্বস্থি অনুভব হওয়া
টিউমার ধীরে ধীরে বড় হলে
৪) পেটে ব্যাথা অনুভব হওয়া
৫) পেট বেশি বড় হয়ে গেলে শ্বাস নিতে ও কষ্ট হতে পারে
৬) ওজন কমে যাওয়া
৭) কিছু ফাংশনিং টিউমার ছাড়া পিরিয়ডের সমস্যা খুব একটা দেখা যায় না।
এই ধরনের সমস্যা হলে রোগীকে অবশ্যই গাইনি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। তিনি বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ক্যানসার নিশ্চিত করবেন।
ওভারিয়ান ক্যানসার দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। যেমন অন্য পাশের গর্ভাশয়ে, লিভার,ফুসফুস, জরায়ু তে ও ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। তখন রোগী সেই সংক্রান্ত সমস্যা নিয়েও আসতে পারে।
ডিম্বাশয়ের ক্যানসার থেকে সুরক্ষা দেয় এমন কিছু বিষয়
কিছু কিছু বিষয় নারীদেরকে এই ডিম্বাশয়ের ক্যানসারে প্রটেকটিভ ফ্যাকটর হিসেবে কাজ করে। যেমন:
- গর্ভধারন
- লাইগেশন
- সন্তানকে নিয়মিত দুগ্ধপান করানো
- ফলমূল সমৃদ্ধ খাবার বেশি খাওয়া
- নিয়মিত পিল খাওয়া ইত্যাদি
ক্যানসার নিশ্চিত হলে গাইনিকোলজিক্যাল অনকোলজির চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকতে হবে। যদিও ক্যানসার চিকিৎসা একটা মাল্টিডিসিপ্লিনারি ব্যাপার। রোগীর অপারেশন কিংবা কেমো বা রেডিওথেরাপির বিষয়ে রোগীর সার্বিক শারীরিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।