গর্ভবস্থার শেষের সপ্তাহগুলোতে স্বাভাবিকভাবেই মায়েরা প্রয়োজনের তুলনায় কম ঘুমাতে পারেন, তার উপর প্রসবকালীন শারীরিক ধকলের পর শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়ে কিন্তু নতুন অতিথি খুব কমই মায়েদের ঘুমানোর সুযোগ দেয়। কিন্তু নতুন মায়েদের জন্যে (এবং বাবাদের জন্যেও) ঘুম অপরিহার্য এবং সব সামলে কিভাবে এই ঘুমের অভাব পূরণ করা যায় তারই কিছু টিপস নিচে দেয়া হলো :
• নতুন অতিথিটি যখন ঘুমাবে,তখন আপনিও ঘুমিয়ে নিন। তবে সে যদি “রাত জাগা পাখি” হয়ে থাকে এবং আপনাকেও তার সাথে রাতে জেগে থাকতে হয় তাহলে তার নতুন রুটিনের সাথে সামঞ্জস্য রাখতে আপনাকে কিছুটা বেগ পেতে হবে।
• ঘরের কাজ এবং অন্যান্য কাজের চিন্তা এসময় যত কম করা যায় ততই ভালো। সুযোগ পেলেই আপনি তাই ঘুমিয়ে নেয়ার চেষ্টা করবেন।
• মাঝে মাঝে বিনোদনের জন্যে বাচ্চাকে কোলে বা পায়ে নিয়ে টিভি দেখতে পারেন এবং এটাতে অপরাধবোধে ভোগার কোন দরকার নেই।
• টানা ৭ কিংবা ৮ ঘন্টার ঘুম এখন খুব একটা সম্ভব না – এই কথা টা মেনে নিতে পারলে আপনি কিছু শান্ত ও কম চাপ বোধ করবেন। ভাংগা ভাংগা ঘুমের মাধ্যমেই আপনাকে এখন চাংগা বোধ করতে হবে- দু:খজনক হলেও এটাই এখন সত্যি।
• এমনকি ১০ মিনিটের ঘুম ও আপনার ক্লান্ত ব্যাটারীকে রিচার্জড করতে পারে এবং ঘুম-খরা কাটাতে আপনাকে সাহায্য করতে পারে।
• আপনি আগে থেকেই খুব গোছানো স্বভাবের হয়ে থাকেন এই সময়টা আপনার জন্যে চ্যালেঞ্জিং হবে তাই যে ই আপনাকে সাহায্য করতে চাইবে,হাসিমুখে তা গ্রহণ করুন।
• প্রয়োজনবোধে এমন মানুষের সাথে থাকুন যারা আপনাকে নি:স্বার্থভাবে স্নেহ করবে এবং আপনার বিশ্রামের সময় আপনার শিশুর সাথে সময় কাটাবে।
• দুইজনের মধ্যে সময় ভাগ করে নিন,যদি আপনার স্বামী রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে সকালে উঠতে পছন্দ করেন তাহলে তখন বাচ্চাকে বাবার কাছে দিয়ে আপনি কিছুটা ঘুমিয়ে নিতে পারেন। কিংবা উল্টোটা হলে সেভাবে সময় ভাগ করে নিতে পারেন,তাহলে দুজনেই কিছুটা সময় বিশ্রাম পাবেন।
• যদি দৈনন্দিন কাজের একটা রুটিন বানাতে পারেন তাহলে আপনি নিয়মিত ঘুম ও বিশ্রামের জন্যে কিছুটা সময় বরাদ্দ করতে পারবেন।
• সবশেষে নিজের যত্ন নিন,বাচ্চাকে কারো কাছে রেখে দীর্ঘ সময় ধরে গোসল করুন,বিছানায় এক বা দুই পাতা বই পড়ুন, এটা আপনার মনকে শান্ত করবে এবং আপনি অল্প ঘুমালেও সতেজ বোধ করবেন।
গবেষণায় দেখা গেছে,নতুন মায়েরা শিশুকে স্তন্যপান করানোর জন্যে গড়ে ৪ ঘন্টা বা তার চেয়েও কম ঘুমান। তাই তারা যে ক্লান্ত বোধ করবেন – এটাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। এই সময় যতটা ঘড়ির সাথে তাল না মিলিয়ে আপনার নতুন অতিথির সময়ের সাথে তাল মিলানোর চেষ্টা করুন। আপনার সন্তানের ঘুমের সময় নিয়মিত হয়ে গেলেই আপনার ঘুমের ঘাটতিও ধীরে ধীরে পূরণ হয়ে আসবে।