HOLDING HAND OF ELDERLY SENIOR CITIZEN W

প্যালিয়েটিভ কেয়ার কী?

প্যালিয়েটিভ কেয়ার এমন এক ধরনের সেবা যা কিনা দুরারোগ্য ও জীবন সীমিতকারি রোগাক্রান্ত ব্যাক্তির ও তার পরিবারের সকল শারীরিক, মানসিক, সামাজিক ও আত্মিক ভোগান্তি নিয়ে কাজ করে। এটি মূলত একটি বিজ্ঞান সম্মত চিকিৎসা পদ্ধতি যা কিনা বহু প্রাচীন কাল থেকেই বিভিন্ন ভাবে চর্চা হয়ে এসছে।

প্যালিয়েটিভ শব্দটি এসেছে ল্যাতিন প্যালিয়াম থেকে যার অর্থ কিনা চাঁদর বা ক্লোক। ১৯৭৪ ক্যানাডিয়ান সারজিক্যাল অনকোলজিস্ট ডা. বেলফর মাউন্ট প্যালিয়েটিভ কেয়ারকে রোগীদের ভোগান্তি প্রশমনের চাঁদর স্বরূপ এই সেবাকে সাধারণ হাস্পাতালের কার্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত করেন। যদিও বা এটি ৭০/ ৮০ দশকের দিকে হাসপাতালের দৈনন্দিন কার্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত হয় প্যালিয়েটিভ কেয়ারের ইতিহাস আসলে আরো পুরনো।

balfour mount in canada postage

ইতিহাসবিদদের মতে চতুর্থ শতকের দিকে সেন্ট ফবিওলার (যিনি কিনা পেশায় একজন রোমান সেবিকা ছিলেন) হাত ধরে প্যালিয়েটিভ সেবার শুরু। ১১ শতকের দিকে নানা ছোট ছোট হস্পিস গড়ে উঠেছিল যেগুলো কিনা তীর্থ যাত্রাপথে পথিকদের বিশ্রামাগার হিসেবে ব্যবহৃত হতো। যাত্রাপথে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তার সেবার জন্য এসব স্থানে মানুষেরা কাজ করতো, তারা এ জায়গার নাম দিয়েছিল safe passage from the world কারণ এখানে তারা মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত সেবা পেতেন। মজার ব্যাপার হল এমন ধরনের সেবার কথা বহু পুরনো সাহিত্যে, সম্রাট আশোকার সময়ে এমন কি গৌতম বুদ্ধের সময়কার ইতিহাস পড়লেও জানা যায়। তবে ১৯৬৭ সালে লন্ডনে সেইন্ট ক্রিস্টোফার হস্পিস স্থাপনার মাধ্যমে ডেইম সিসিলি সন্ডারস নামক একজন (যিনি জীবনের প্রাথমিক দিকে একজন সেবিকা হলেও পরবর্তীতে ডাক্তারি ডিগ্রী গ্রহণ করেছিলেন) হাসপাতাল ভিত্তিক আধুনিক প্যালিয়েটিভ কেয়ারের সূচনা করেন।

রোগীর পাশে ডেইম সিসিলি সন্ডারস
রোগীর পাশে ডেইম সিসিলি সন্ডারস

প্যালিয়েটিভ কেয়ার দীর্ঘমেয়াদী নিরাময় অযোগ্য ও জীবন সীমিতকারী রোগে আক্রান্ত যেকোনো ব্যক্তি ই পেতে পারেন। যেমন- শেষ পর্যায়ের ক্যান্সার, হার্ট, লিভার ও কিডনী এর জটিল রোগ, স্ট্রোক ও অন্যান্য স্নায়ু রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি, বার্ধক্য জনিত রোগ, ডিমেনশিয়া, এইচআইভি পজিটিভ রোগী, সেরেব্রাল পালসি, শিশুদের নানান দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত সকলেই এই সেবা পেতে পারেন। তবে বর্তমানে ল্যান্সেট জার্নালে বলা হয়েছে যেকোনো রকম ভোগান্তিতেই এই প্রশমন সেবা একজন রোগী পেতে পারে।

এটি শুধু রোগীরই নয় বরং রোগীর পরিবারের ভোগান্তিকে কমানোর লক্ষ্যেও কাজ করে একটি পুরো পরিবারকে সার্বিক (হলিস্টিক) সেবা প্রদান করে।

Dr Nadia Farheen

Phase B Resident, Department of Palliative Medicine, BSMMU

Follow us

Don't be shy, get in touch. We love meeting interesting people and making new friends.