১০০ জনে ১ জন মহিলার থাকতে পারে বিরল এক জিন যা প্রসব করে আরামের। অথচ সন্তান প্রসব বলা হয় অন্যতম সবচেয়ে বেদনার জীবন অভিজ্ঞতা। প্রসব কী করে হতে পারে স্বস্তির, বিজ্ঞান কী বলে?
সাম্প্রতিক এক গবেষণা বলে ১০০ জন নারীর মধ্যে ১ জনের আছে এমন জিন যা নারীর বেদনা সহার ক্ষমতা বাড়ায়। এর চৌকাঠ করে উঁচু। কোন অবেদন ওষুধ ছাড়া এরা জন্ম দিতে পারেন শিশুর। একদল নারীর জিন বিশ্লেষণ করে পাওয়া যায় KCNG4 নামে এক ধরনের জিন ভেরিয়ানট। যেসব নারী তাদের প্রথম সন্তান পূর্ণ বর্ধিত পর্যায় পর্যন্ত নিয়েছেন (full term) তাদের মধ্যে এমন জিনের উপস্থিতি পাওয়া যায়। যোনি পথে প্রসবের সময় এরা ব্যথা নাশকের চাহিদা দেন নি। তবে ব্যথা সহ্য করাই একমাত্র বিষয় নয়। ব্যথা নাশক কোন কিছু তারা প্রসবের সময় চান না। প্রথম প্রসবের সময় তো বটেই। ব্যথা সহ্যের ক্ষমতা টেস্ট করা হয়েছে একদল নারীর। তাপ, চাপ প্রয়োগ, বরফ শীতল জলে হাত প্রয়োগ কত পরীক্ষা। যাদের ব্যথা উপশমক লেগেছিল এদের উপরও একই পরীক্ষা প্রয়োগ করা হল। গবেষকরা দেখলেন যাদের মধ্যে এমন জিনেটিক ভেরিয়েনট আছে এদের প্রসবে ব্যাথা তেমন হয়না।
স্নায়ু কোষে সুইচ ত্রুটি গঠন কি কারণ?
জিনেটিক ভেরিয়ানট কাজ করে প্রাকৃতিক অবেদক উপশমক হিসাবে। সে জন্য প্রসবের সময় স্নায়ু কোষদের সুইচ অন হতে প্রয়োজন হয় প্রসবকালে অনেক বেশি সংকোচন। তারা আরও দেখলেন, যারা প্রসব কালে বেদনা নাশকের প্রয়োজন বোধ করেন নি, এদের পেইন থ্রেশলড বা বেদনা সহার সীমা অনেক উঁচু। KCNG4 জিন ভেরিয়েনট হল সেই মূল চাবিকাঠি যার জন্য শরীর এক স্নায়ু থেকে অন্য স্নায়তে বেদনা সংকেত বহন করে নিয়ে যাবে। কোন নারীর যদি এই জিনের বিরল ভার্সন থাকে তাহলে যে প্রোটিন দেহে বিদ্যুৎ সংকেত বয়ে নিয়ে যায় এটি অবশ হয়ে যায়। এমন থাকে ১০০ জনে একজন নারীতে। এই আবিষ্কার বিজ্ঞানীদের আরও অনেক সুলুক সন্ধান দেবে, বুঝতে সাহায্য করবে ব্যথা সংকেতকে। আর বেদনার অভিজ্ঞতা আরও বোধ গম্য হবে আর বেদনা নাশক নতুন আরও আবিষ্কার হবে একটি উদাহরণ।
ঋতু স্রাবের সময় জরায়ুর সংকোচনের সময় অসহ্য যন্ত্রণা। পুরুষদের সে রকম বেদনা সহা জিন আছে কিনা সে সম্বন্ধে এখনও নিশ্চিত নন বিজ্ঞানীরা। সন্তান প্রসবের সময় নারীর প্রচণ্ড চাপ আর বেদনা নিয়েই তাদের কাজ হয়েছে এ পর্যন্ত।