ভ্রমন প্রিয় আমার সবসময় তাই এ নিয়ে স্মৃতি রোমন্থন ।
সেবার ভারত ভ্রমনের উদ্যেশ্য ছিল তীর্থ দর্শন আর গয়ায় পূর্ব পুরুষের উদ্যেশ্যে পিণ্ড দান ।
কলকাতা এলাম বিমানে , আর অবধারিত ভাবে আমার জেঠাসের বাসায় উঠা । তাঁর সঙ্গে এমন এক বন্ধন যা এড়িয়ে হোটেলে উঠা একেবারেই অসম্ভব বিশেষ করে আমি যদি থাকি সস্ত্রীক । একবার এড়িয়ে ছিলাম যখন গিয়েছিলাম ভারতে সবান্ধব না জানিয়ে।
একবার হোটেলে উঠার দুঃসাহস করেছিলাম এতে তিনি আর তাঁর স্বামী বিজয়দা মহা ক্রোধে হোটেলে এসে বাক্স পেঁটরা নিয়ে তুলিছিলেন তার বাসায় । তার পুত্র কন্যা তাদের কন্যারা সমান আগ্রহি আমাদেরকে পাওয়ার জন্য। একান্ন বর্তী হয়ে তাদের সহজ সরল বসবাস বেশ আনন্দময় তাদের জন্য আর আমাদের তা দেখে সুখ।
যাহোক কলকাতা বাস দ্রুত ছেড়ে গঙ্গার পারে পারে তীর্থ দর্শনের জন্য প্রস্তুতি । আমি আর আমার স্ত্রী গেলাম কলকাতার ফেয়ারলি প্লেস ট্রেনের টিকেটের জন্য।
মনে হল টিকেট প্রাপ্তি কঠিন হবে। তবে বিদেশিদের বিশেষ টিকেট থাকে জেনেছি।
আমি আর আমার স্ত্রীর পাসপোর্ট কাউন্টারে দিলাম আর ভ্রমণের উদ্যেশ্য আর কোথায় কোথায় যেতে চাই বললাম । করনিক দেখলেন আমরা সিনিয়ার সিটিজেন আর এরপর জানলেন আমি চিকিৎসক । তিনি তা শুনে এক গাল হেসে আমাকে ভেতরে ডেকে নিয়ে গেলেন সহকারি ম্যানেজারের কাছে।
তিনি আমাদের সাদর অভ্যর্থনা জানিয়ে নিজেই আমাদের ট্রাভেল প্ল্যান করে টিকেট কেটে দিলেন ।
আমি বুঝলাম আমরা সিনিয়ার সিটিজেন তদুপরি আমি ডাক্তার হয়ার জন্য এমন সম্মান আর সুবিধা আমার জুটল ।
পৃথিবীর নানা দেশে আমি পেয়েছি এমন সম্মান আর সুবিধা এ জন্য।
যাক প্রসন্ন মন নিয়ে যাত্রার প্রস্তুতি ।
গঙ্গার পারে পারে তীর্থ দর্শন
কাশী বারানসী এলাম। গয়াতে পিণ্ডদান করেছি ,পূর্ব পুরুষের উদ্যেশ্যে স্মৃতি তর্পণ । গয়াতে এ কাজ। পাণ্ডাদের সংস্পর্শে আসতেই হয়, এলাম যিনি আমার কাজ করবেন , দেখি আমি বলতেই তিনি একটি বড় বাঁধাই খাতা বের করলেন এরপর আমার পিতৃ পুরুষ সবার নাম বলে দিলেন কারা কারা কবে এসেছেন আমি অবাক হলাম কি করে সম্ভব। কুম্পি উ টার কিচ্ছু নাই । সব স্মরণে থাকে কি করে যাহোক পিণ্ড দানের কাজ সমাপ্ত হল ।
এর পর বানারসি বা কাশী । বাংলাদেশ থেকে হোটেল বুক করার চেষ্টা করেছিলাম সফল হইনি । যাহোক ট্রেন থেকে নেমে ট্যাক্সি অলার সাহায্যে একটি হোটেল পেলাম , আমি আমার স্ত্রী । ভালই ।
বারানসি যাকে বাঙ্গালিরা বলে কাশী এ হল উত্তর প্রদেশে। আর ধর্ম এখানে প্রবল।এদিক ওদিক ভক্তরা আর পর্যটক অনেক।
ফেলুদার কথা মনে পড়বে । রিক্সায় চড়ে যাচ্ছে ফেলুদা মানে সৌমিত্র আর কথা হচ্ছিল লাল মহন গাঙ্গুলির সাথে মানে জটায়ুর সাথে । লাল মহন বাবুকে শুনালেন এখানে অসংখ্য দেব দেবির মন্দির । তেত্রিশ কোটি
চিন্তার জাল ছিঁড়ল ।বাজারের এক কোনে একটি তরুন কি সুন্দর বাশি বাজাচ্ছে। এখানে ধর্ম প্রবল আর রাজনীতিতে বিশেষ রে উত্তর প্রদেশের রাজনীতিতে ধর্মের প্রভাব অনেক দিন থেকে। আমরা দুজন রিক্সায় চলেছি । দেখে দেখে । বাবা বিশ্ব নাথের শহর বলে কথা।
অদিকে দেখি রাবড়ি হচ্ছে পরে খান ভাব্ লাম আর দেখি অনেক গুলো ছোট ছোট ডুগ দুগি বানর নাচাতে লাগত ফুট পাথে বাজিকরদের আর আমরাও ডুগ ডুগি বাজিয়েছি ।
এসে গেছি দশাশ্বমেধ ঘাট । গঙ্গা নদীর তীরে প্রধান ঘাট । প্রাচীন তম আর পবিত্র তম। চারদিকে মানুষের দারুন ভিড় । খব গোলমাল শব্দ তবে উপভোগের স্থান বটে । অনেকে স্নান করছেন। ১৯১২ সালে দ্বার ভাঙ্গা রাজ্যের শ্রি ধর নারায়ন এই ঘাট নির্মাণ করেন। দেখা হল মণিকর্ণিকা , হরিশ্চন্দ্র ঘাট । নৌকা ভ্রমন করা হল। এর পর দার ভাঙ্গা ঘাট । প্রয়াগ থেকে এক ডুব দিয়ে দার ভাঙ্গা ঘাটে উঠলেন মছলি বাবা। কে মছলি বাবা ? সত্যজিৎ রায় । জয় বাবা ফেলুনাথ । এর কাহিনি আর বলতে চাইনা এখন। এক দিকে লেখা নমামি গঙ্গে। গঙ্গাকে আরও পরিস্রুত আর ও ভক্তি বিন্ম্র করার এক প্রকল্প । কিন্তু সেই প্রকল্পের দশা কহ তব্য নয় দশাশ্ব মেধ ঘাটের দশা দেখলে বোঝা যাবে । মানুষ নির্বিবাদে স্নান করছেন। কাপড় কাচছেন । তেল মাখছেন। সাবান মাখছেন । অংগ প্রক্ষালন করছেন সব।
চারদিকে কিল বিল করছে মানুষ । অ দকে বিরাট স্ক্রিনে জলদ গম্ভির স্বরে বিশ্ব নাথের নাম কীর্তন হচ্ছে । বিশ্ব নাথের মাথায় জল ঢালার জন্য ভিড় । আকুল আর ব্যাকুল সব। মছলি বাবারা অদৃশ্য মন্ত্র পুত জল দিয়ে জন গন কে বশিভুত করেন। তাদের ধরার জন্য ফেলু মিত্তির রা কি ঘুরছেন ? পঞ্চ গঙ্গা ঘাট থেকে আমি আর আমার স্ত্রী বিভিন্ন ঘাট দেখে ছুয়ে চলেছি । দশাশ্বমেধ ঘাটের দিয়ে আবার। মণিকর্ণিকার ঘাট পেরিয়ে স্মশান । আগুন জ্বলছে ।
যে ঘাট টি শ্মশান কে কেন্দ্র করে ভিকি কৌশলের প্রথম ছবি মাখানে গল্প বাধা সুর করা ,
গঙ্গার তীরে তীরে মোট ৮৪ টি ঘাট ।শেষ মেস যাব হরিশ্চন্দ্র ঘাট সেখানেই নৌকা বিহারের শেষ । মনে পড়ল সেই পৌরাণিক কাহিনী রাজা হরিশ্চন্দ্র সব হারিয়ে শেষ পর্যন্ত চণ্ডাল এরপর সন্তান রোহিতাশ্ব কে দাহ করতে গিয়ে বিদ্যুতের ঝিলিকে দেখলেন তার সন্তানকে আর ধর্মরাজ তার ধর্ম পরায়নতা দেখে ফিরিয়ে দিলেন সব রাজত্ব , রাজ্যপাট আর রোহিতাশ্বকে ও । রাজা রানী র মিলন হল আর হলসন্তানের সাথে ও
সন্ধ্যায় গঙ্গা তীরে বসে আরতি দেখা ।আর সেই অপূর্ব দৃশ্য ভিডিও বদ্ধ করা।
নিরামিষ আহার পর্ব সারলাম একটি হোটেলে ভালই আর রাবড়ি খেয়েছি আগেই।
এর পর আবার চলা । কাশী ছেড়ে এবার যাওয়া ।
হরিদ্বারের পথে যাত্রা । আবার গঙ্গা দর্শন
পুনশচ ভ্রমন নিয়ে বই আমার একটি প্রকৃতির লীলাভূমি ক্যানাডা প্রকাশ্ করেছেন মুক্তধারা । পড়ে দেখতে পারেন। আমার মেয়ে আর জামাতা কে দেখতে গিয়েছিলাম ক্যানাডা আর সে সময়ে ভ্রমন স্মৃতি । ২০১৮
১১ মার্চ ২০২২ । এই মাত্র ডা অয়াইনযা আমাকে বলল তার সম্প্রতি শান্তিনিকেতন ভ্রমনের কথা । মনে পড়ল আমার অতীত স্মৃতি আমি ১৯৫২ সালে শান্তিনিকেতনে পাঠ ভবনে ছিলাম ছাত্র । বয়স ৬ হবে। আর আমি আমার ভ্রমণ নিয়ে লিখলাম প্রবন্ধ ” আমার দেখা শান্তিনিকেতন ” অখান থেকে ফিরে কয়েক বছর পর ১৯৫৬ সালে পড়লাম সিলেটের ব্রাহ্ম সমাজ এর সমাবেশে। সবাই বলেন সাধু সাধু । ছাপা হল জনশক্তি পত্রিকায় সম্পাদক ছিলেন নিকুঞ্জ বিহারি গোস্বামী । সেই আমার প্রথম পত্রিকায় ছাপা লেখা ।