রক্তশূন্যতা বাংলাদেশের একটি অন্যতম পরিচিত রোগ। রোগ না বলে এটাকে অন্তর্নিহিত সমস্যার বহিঃপ্রকাশ বলাই শ্রেয়। নারী, পুরুষ উভয়েরই রক্তশূন্যতা হতে পারে। বিভিন্ন কারণে রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। যা মধ্যে আয়রনের অভাবজনিত কারণ বেশি পাওয়া যায়। তবে আজকের আলোচনার বিষয় হচ্ছে নারীরা কেনো আয়রনের অভাবজনিত রক্তশূন্যতায় বেশি ঝুঁকিতে আছেন?
১.প্রাকৃতিক নিয়মে প্রতি মাসে মাসে নারীদের পিরিয়ড হয়।তাই প্রতি মাসেই ব্লাড লস হচ্ছে। সেই ঘাটতি পূরন হয় না সবসময়।
২.নারীর মাতৃত্বকালীন সময়ে অতিরিক্ত চাহিদার কারণে রক্তাল্পতা দেখা যায়।
৩. প্রসবকালীন সময়ে রক্তপাত হয়ে থাকে সেটা নরমাল ডেলিভারি হোক কিংবা সিজারিয়ান ডেলিভারি হোক।
৪. আমাদের দেশের নারীদের সঠিক এবং পর্যাপ্ত পুষ্টি নিশ্চিত হয় না প্রায়ই। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে নারীরা অবহেলার শিকার হন।তাই পুষ্টি নিশ্চিত হয় না।
৫. নিয়মমাফিক কৃমির ঔষধ না খাওয়া।এটা ছেলেমেয়ে উভয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।ছেলেদের যেহেতু পিরিয়ড, প্রেগ্ন্যাসির ব্যাপার নাই তাই কম ঝুঁকিতে থাকে।
রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে কী করণীয়?
১. কিশোরী বয়স থেকেই মানে যখন থেকে পিরিয়ড শুরু হয় তখন থেকেই সঠিক পুষ্টি নিশ্চিত করা পরিবারের দায়িত্ব। আমাদের চারপাশে সহজলভ্য খাবারেই প্রচুর আয়রন আছে।যেমন- কলা,কচু শাক,মুরগির কলিজা,কচুর লতি,আপেল, মাংস( গরু,মহিষ ইত্যাদি).। আয়রনসমৃদ্ধ খাবার সঠিকভাবে হজমের জন্য সাথে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবারও খেতে হবে।যেমন- কমলা, আমলকি, পেয়ারা,তেঁতুল, লেবু ইত্যাদি। প্রয়োজনে ভিটামিন সি ট্যাবলেট খাওয়া যেতে পারে।
২.মাতৃত্বকালীন এবং পরবর্তী অন্তত ৩মাস আয়রনের ঔষধ খেয়ে ঘাটতি পূরণ করতে হবে।
৩.নিয়মমাফিক কৃমির ঔষধ খাওয়া।
রক্তশূন্যতায় আক্রান্ত ব্যক্তির নানা ধরনের শারিরীক সমস্যা দেখা যায়। যেমন অতিরিক্ত দুর্বলতা, চুল পড়া, বুক ধড়ফড় করা ইত্যাদি।
আসুন আমরা সবাই রক্তশূন্যতা নিয়ে সচেতন হই। ঝুঁকি বিবেচনা করে নারীদেরকে নিজের শারীরিক সুস্থতার প্রতি আরো মনোযোগী হতে হবে।