মুসলমানি বা খতনার সময় এনেস্থেশিয়া: যা জানা জরুরী

৭ বছরের আয়ানকে ঢাকার একটি নামকরা বড় হস্পিটালে সুন্নতে খতনা বা সারকামসেসান করতে এসেছেন রায়হান দম্পতি। তাদের সার্জন অনেক বড় প্রফেসর। এই অপারেশন উনার জন্য খুব কমন একটি প্রসিডিউর।ইনশাল্লাহ ভয় পাবার কিছু নেই।
রায়হান দম্পতির মুল ভয় এনেস্থিসিয়া। ছোট বাচ্চাদের এনেস্থিসিয়া নিয়ে অনেক খারাপ সংবাদ উনাদের নজরে এসেছে,যেমন বাচ্চার জ্ঞান ফিরতে দেরি,জ্ঞান ফেরার পর ইউরিন পাস করতে দেরি,অপারেশন টেবিলে সুই স্যালাইন দেখে ভয়ে অস্থির হয়ে যাওয়া, শাঃসকষ্ট, অপারেসন পরবর্তি প্রচন্ড ব্যথা, ইভেন অপারেশনের সময় এনেস্থিসিয়া দিতে দিয়ে জটিলতা পরে বাচ্চাকে আই সি ইউতে ভর্তি!

প্রি-এনেস্থিটিক ভিজিট এর সময় আপনার এনেস্থিসিওলজিস্টের সাথে আপনার কাউন্সিলিং ভীষন গুরুত্ববহ একটি ব্যাপার। যে হস্পিটাল বা ক্ষেত্রবিশেষে বাংলাদেশে সার্জন, এই ব্যাপারটাকে গুরুত্ব দিবে না বা জানে না সেখানে আপনার বেবিকে না নেওয়াটাই আপনার কেয়ারিং এটিটিউডের পরিচয়।

সারকামসেসান এর জন্য বাচ্চাদের পুরপুরি অজ্ঞান করা লাগে। খুব সেন্সিটিভ জায়গায় অল্প সময়ের জন্য এ অপারেসন। বয়স ভেদে বাচ্চার এক্টিভিটির উপর ডিপেন্ড করে অপারেসন টেবিলে উঠানোর আগেই অনেক বাচ্চাকে সামান্য ঘুমের সিরাপ দেয়া হয়।এরপর ক্যানুলা করে বা ক্যানুলা করা না গেলে অপারেসন টেবিলে ক্যানুলা করা হয়।পরবর্তীতে ইঞ্জেকশন এবং গ্যাসের মাধ্যমে এনেস্থিসিয়া মেইনটেন করা হয়।অপারেসন এর পর বাচ্চা যেন কোন ব্যথা বোধ না করে এ জন্য জেনারেল এনেস্থিসিয়ার পাশাপাশি বাচ্চার পেছনে মেরুদণ্ডের শেষভাগেও এক ধরনের বিশেষ এনেস্থিসিয়া দেয়া হয় যাকে কডাল এনেস্থিসিয়া বলে। কডাল ছাড়াও অন্যপন্থায় ব্যথা কমানো যায়। কডালের সুবিধা হল অপারেসনের পর কোনরকম ব্যথা না থাকায় আপনার বাচ্চা হেসে খেলেই বাসায় যাবে।পুরো প্রসিডিউরে আপনার সোনামণিকে কোনরকম ব্যথা দেয়া হয়না এক্সেপ্ট ক্যানুলা করা।সারকামসেসানের জন্য আরো কয়েকটি এনেস্থিসিক টেকনিক থাকলেও এটিই সবচেয়ে নিরাপদ।

মনে রাখা জরুরী যে বাচ্চাদের যেকোন অপারেশনে পর্যাপ্ত কাউন্সিলিং,লেটেস্ট এনেস্থিসিয়া মেশিন, লিস্ট হার্মফুল এনেস্থিটিক গ্যাস, সিনিয়র কম্পিটেন্ট এনেস্থিসিঅলজিস্ট এবং সার্জনের প্রেজেন্স মেন্ডেটরি।একজন ভালো সার্জন তার অপারেটিভ ফিল্ডের মাস্টার।একজন ভালো এনেস্থেসিওলজিস্ট অপারেসন রুমের বাকি সব কিছু মানে বাচ্চার ক্যানুলা করা,ওজন অনুযায়ী বাচ্চার যতটুকু ড্রাগ লাগবে তার মাইক্রো ম্যানেজমেন্ট,অপারেসন রুমের সার্বিক নিরাপত্তা,এনেস্থিসিয়া মেইনটেন করা,ব্লাড এবং ফ্লুইড রিপ্লেসমেন্ট, অপারেসন পরবর্তি কাউন্সিলিং, ব্যথা ম্যানেজ করার মাস্টার।মানে এই সমস্ত আয়োজনের উদ্দেশ্য হল আপনার বাচ্চার স্মুথ অপারেসন এবং সে যেন হেসে খেলেই বাসায় যায় এটার এসিওরেন্স দেয়া।
এনেস্থিসিয়া আর সার্জারি নিয়েও কোনরকম নেগেটিভ ধারনা যেন না হয়।

বাচ্চাদের অপারেসনের ক্ষেত্রে খুব ভালো সার্জনের পাশাপাশি টপ নচ এনেস্থিসিয়ার নিশ্চয়তা যেখানে পাবেন সেখানেই আপনার আদরের সোনামণিকে নিয়ে যাবেন।লাইফটাইম সাইকোলজিক্যাল ট্রমা করবে এরকম কোথাও না।রায়হান দম্পতি আয়ানকে সকালে ১০ টায় হস্পিটালে আসেন এবং স্যাটিসফেকশন নিয়ে সেদিন বিকাল ৩ টাতেই বাসায় চলে যান।

Dr Md Tanvir Majumder MBBS, DA (BSMMU)

Specialist, Intensive Care Unit, Square Hospitals Ltd

Follow us

Don't be shy, get in touch. We love meeting interesting people and making new friends.