কার্ডিয়াক এরেস্ট আর হার্ট এটাক মনে হতে পারে একই জিনিষ কিন্তু এরা ভিন্ন অবস্থা বটে। মনে করুন আপনার শরীর ঘরের মত। তা হলে কার্ডিয়াক এরেস্ট হল বিদ্যুতের সমস্যা আর হার্ট এটাক হল প্লাম্বিং-এ ব্লকেজ। দুটোই প্রাণসংশয়ী তবে হার্ট এটাক এত প্রাণঘাতি নাও হতে পারে একে সময়মত সামাল দেয়া সম্ভব।
কার্ডিয়াক এরেস্ট
কার্ডিয়াক এরেস্ট বা হঠাৎ কার্ডিয়াক ডেথ পশ্চিমা দেশের পরিসংখ্যান প্রাণ কেড়ে নেয় প্রতি বছর ৪,০০,০০০ জনের।
হঠাৎ হার্টের এমন মৃত্যু হতে পারে রক্ত চাপ ধ্বসে পড়ল আর এজন্য হার্টের কাজকর্ম বন্ধ হয়ে গেল। আবার হৃদ স্পন্দনে দারুন অনিয়ম
হলেও এমন পরিস্থিতি হতে পারে।
দুর্ভাগ্য বশত কার্ডিয়াক এরেস্ট হলে বাঁচার সম্ভাবনা খুব কম। অবিলম্বে হাসপাতালে নিলেও বাচার সম্ভাবনা ৭-৮%।
হৃদরোগের সতর্ক সংকেত সম্বন্ধে অবহিত হলে ঝুঁকি কমানো যায় আর এমন উপসর্গ হলে অবিলম্বে সাহায্য নিলে ডাক্তারের কাছে গেলে বাঁচার সম্ভাবনা বাড়ে।
হার্ট এটাক
হার্টে রক্ত সরবরাহ করছে এমন ধমনী পূর্ণ বা আংশিক অবরোধ হলে আর হার্টের পেশিতে রক্তের সরবরাহ ব্যাহত হলে হতে পারে হার্ট এটাক। হৃদপেশিতে অক্সিজেন যেতে পারে না এতে টিস্যু ক্ষতিগ্রস্ত হয় বা হয় টিস্যুর মৃত্যু। হাসপাতালে নেয়ার পর নির্ণয় করার জন্য করা হয় কার্ডিয়াক টেস্ট যেমন ইলেক্ট্রোকারডিওগ্রাম, ইকোকার্ডিওগ্রাম, এঞ্জিওগ্রাফি এরকম টেস্ট। ট্রপোনিনও মাপা হতে পারে।
কারা আছেন ঝুঁকিতে
হার্ট এটাকের নানা কারণ থাকলেও যাদের করোনারি ধমনী রোগ আছে তাদের ঝুঁকি বেশি। করোনারি ধমনী রোগের জন্য আছে কিছু পরিবর্তন যোগ্য ঝুকি আর কিছু আছে অপরিবর্তনযোগ্য।
যে সব ঝুকি পরিবর্তন সম্ভব সেগুলো
- তামাক ব্যবহার
- উচ্চ রক্ত চাপ
- ডায়াবেটিস
- উচু মান কোলেস্টেরল
আর অপরিবর্তনীয় হল
- পারিবারিক ইতিহাস
- জেন্ডার
- বয়স
- পুরুষ আর বয়স্কদের ঝুকি বেশি
নারীদের মধ্যে হার্ট এটাকের উপসর্গ
হার্ট এটাকের উপসর্গ যেমন বুকে অস্বস্তি, বুকে আটসাট ভাব, শ্বাসকষ্ট, মাথা ঝিম ঝিম, মূর্ছা। তবে নারীদের ক্ষেত্রে ভিন্ন হতে পারে। নারীদের হতে পারে শ্বাস কষ্ট, বমি ভাব, বা বমি, চোয়ালে বা পিঠে ব্যাথা । প্রবল ক্লান্তি একটা বড় উপসর্গ। আর মাথা পাতলা লাগা আর শীতল ঘাম। হার্ট এটাক হতে পারে মনে হলে অবিলম্বে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
ওষুধের মধ্যে তা ডাক্তারেরে পছন্দ। অনেক সময় এস্পিরিন, বিটা ব্লকার, দুশ্চিন্তারোধী ওষুধ। অবস্থা বুঝে ডাক্তার ব্যবস্থা নেবেন। হার্ট এটাক হয়েছে মনে হলে অনেক সময় করা হয় এঞ্জিওপ্লাস্টি আর স্টেন্ট দেয়া হয়। রুদ্ধ ধমনী যাতে খুলে যায়। চিকিৎসা যত দ্রুত হবে তত সুফল।
যত দেরি হবে হার্টের পেশির ক্ষতির মাত্রাও বাড়বে । সময় হল হৃদ পেশি, Time is heart muscle.
কার্ডিয়াক এরেস্ট একই সাথে হতে পারে হার্টএটাকের সাথে আবার এর সাথে নাও হতে পারে। এইডি বা অটোমেটেড এক্সটারনেল ডিফিব্রিলেটার বা সিপিআর বা কার্ডিওপালমোনারি রিসাসিটেশন কাজের হলেও হার্টে অস্বস্তি বা সমস্যা মনে হলে অবিলম্বে হাসপাতালে যেতে হবে।