কেমোথেরাপি হল ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য ওষুধের পদ্ধতিগত ব্যবহার। এসব ওষুধ সাধারণত ইনজেকশন বা শিরার মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করানো হয়, তবে এদের ট্যাবলেট আকারেও পাওয়া যেতে পারে। Hodgkins লিম্ফোমা, লিউকেমিয়া এবং টেস্টিকুলার ক্যান্সারসহ বেশ কিছু ক্যান্সারের ক্ষেত্রে রোগের বিস্তৃতি ব্যাপক হলেও কেমোথেরাপি তা কার্যকরভাবে নিরাময় করতে পারে।
ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা না থাকলেও, প্রায়শই ক্যান্সার অপসারণের অপারেশানের পর রোগীদের কেমোথেরাপি দেয়া হয়। একে বলা হয় Adjuvent কেমোথেরাপি। কিছু ক্যান্সারের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে স্তন এবং কোলোরেক্টাল ক্যান্সারের ক্ষেত্রে,এই কেমোথেরাপি ক্যান্সার ফিরে আসার সম্ভাবনাকে অনেকখানি কমিয়ে দেয়। গবেষণায় দেখা গেছে,কেমোথেরাপি পাওয়া ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীরা, কেমোথেরাপি না পাওয়া ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীদের চেয়ে বেশি সময় বেঁচে থাকেন।
ক্যান্সারকে সঙ্কুচিত করতে এবং ক্যান্সারের অপারেশানকে তুলনামূলক সহজ এবং সফল করতে অনেক সময় অপারেশানের আগেই কেমোথেরাপি দেয়া হয়। একে বলা হয় Neoadjuvent Chemotherapy এবং এটি ব্রেইন, স্তন এবং মূত্রাশয়ের ক্যান্সারে বেশি ব্যবহৃত হয়। যেসব ক্ষেত্রে ক্যান্সার নিরাময়যোগ্য নয়, সেসব ক্ষেত্রেও কেমোথেরাপি ক্যান্সারের জটিল উপসর্গগুলোকে উপশম করে এবং রোগীর জীবনযাত্রার মান উন্নত করে। এটি Palliaive Treatment নামে সারা বিশ্বে পরিচিত।
কেমোথেরাপিতে অনেক সময় একাধিক ওষুধ ব্যবহৃত হয়। এধরনের Combination কেমোথেরাপিতে বেশ কিছু ওষুধ একসাথে দেয়া হয়,যারা অনেক বেশি ক্যান্সার কোষকে একসাথে ধ্বংস করতে পারে। Anti-ক্যান্সার ওষুধের ক্ষতিকর দিক হল যে তারা প্রায়ই ক্যান্সার কোষের পাশাপাশি শরীরের স্বাভাবিক কোষগুলোকেও আক্রমণ করে।যেসব স্থানের কোষ খুব দ্রুত বিভাজিত হয় যেমন খাদ্যনালী এবং প্রজনন সিস্টেমের আবরণ, Hair follicles – এগুলো কেমোথেরাপির দরুণ বেশি প্রভাবিত হয়।
ব্যবহৃত ওষুধের উপর নির্ভর করে কেমোথেরাপির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া কম-বেশি হতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে চুল পড়া, মুখের ঘা, খাবার গিলতে অসুবিধা, বার বার মুখ শুকিয়ে যাওয়া, বমি বমি ভাব, বমি, ডায়রিয়া, রক্তপাত এবং শরীরের নানা স্থানের ইনফেকশান।মাঝে মাঝে শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অংগ যেমন হার্ট,লিভার,কিডনি এমনকি স্নায়ুও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কেমোথেরাপি শেষ হবার পর পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া ও কমে যায়।তবে আশার কথা হচ্ছে,বিজ্ঞানীরা এসব ওষুধের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া কমানো এমনকি পুরোপুরি বিলুপ্ত করার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।