ইন্টারভিউ হতে পারে স্নায়ু পীড়াদায়ক। আপনাকে বিচার করা হচ্ছে আর তা ভেবে মনে হয় স্ট্রেস ।
আসলে ইন্টারভিউ হল নিগোশিয়েশন। আমরা চাই নিজেকে প্রমান করতে, চাই আমাকে গ্রহণ করা হোক , আর আমি অযোগ্য এমন ধারণা আমার সম্বন্ধে যাতে না হয়, আমি যাতে এতে ব্যর্থ না হই এমন ভয় ঘিরে ধরে। যদি বুঝি ইন্টারভিউ ভাল হচ্ছে না তাহলে খুব উত্তেজনা হয় মনে আর শান্ত থাকা কঠিন হয়ে যায়।–মাইন্ডফুলনেস কোচ গিটান পেলেরিন (Gaëtan Pellerin)
তবে মনে যাতে আত্মবিশ্বাস অটুট থাকে সেজন্য আছে ৫ পরামর্শ।
১। হোম ওয়ার্ক করুন
লড়াইয়ের অর্ধেক হল প্রস্তুতি, বলেন কেরিয়ার এক্সপার্ট আমানডা অগাস্টিন। কোম্পানির ওয়েবসাইট রিভিউ করেন, গ্লাস ডরে দেখুন রিভিউ, এমন কেউ থাকে যারা কোম্পানি সম্বন্ধে আর এর ইন্টারভিউ প্রসেস সম্বন্ধে জানে এমন কারো সাথে আলোচনা করুন। পেলেরিন বলেন, যিনি ইন্টারভিউ করবেন তার সম্বন্ধে বা সেই বোর্ডের লোকদের সম্বন্ধে জানাও একটা লার্নিং। তাদের পছন্দ, লক্ষ্য এসব জানা।
২। তৈরি থাকুন উদাহরন নিয়ে
অন্য প্রার্থীদের আপনার মত একই দক্ষতা থাকতে পারে । আপনি কী করে ভিন্ন হতে পারেন? আপনি দেখাতে পারেন উদাহরন দিয়ে কিভাবে আপনি নিজ দক্ষতা ব্যবহার করেছেন, বলেন হায়াট ফানেল এক্সিকিউটিভ সার্চের সহ প্রতিষ্ঠাতা শেরিল হায়াট।
“আমি সেল বাড়তে সাহায্য করেছি” এতে হলনা। বিশদ দিতে হবে। যেমন ” আমি কোম্পানির সেল বাড়িয়েছি ৩০%”। বা আমি কোম্পানির টাকা এ পরিমাণ বাচিয়েছি আর এভাবে তা বলতে হবে। আপনি যে জবের জন্য এলেন সেটা বিবেচনা করে ভাবুন আপনি ভিন্ন কী করতে পারেন যা অন্যে পারবে না।
৩। আপনি কিভাবে রেস্পন্ড করবেন এর চর্চা করুন
ভাবুন সেই সব ইন্টারভিউ প্রশ্ন যা আপনাকে নার্ভাস করতে পারে সে রকম প্রশ্নের উত্তর কিভাবে দেবেন এজন্য দরকার ব্রেন স্টর্ম । বলেন আমানডা অগাস্টিন, একটি প্যারা মুখস্থ করার চেয়ে বরং আপনার মূল বক্তব্য বলা হয় এমন রেস্পন্স প্র্যাকটিস করুন তাহলে আপনার বলা হবে সাবলীল, স্বচ্ছন্দ, মনে হবে মুখস্থ বলছেন। ” পেলেরিন বলেন, আগে ভাগে যে বক্তব্য দেবেন এর চর্চা করে নিলে ইন্টারভিউতে মূল বার্তা যা দিতে চান এতে লক্ষ্য থাকবে। মুল বার্তা নোট করে নিতে পারেন।
৪। নিজেকে ধনাত্মক রাখুন
ইন্টারভিউর আগে নিজেকে উজ্জীবিত রাখুন, শুনুন মন ভাল করা মিউজিক, দেখতে পারেন মটিভেশন্যাল ইউটিউব ভিডিও, পড়ুন অনুপ্রেরনামূলক বাণী, বলেন মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক এজে মারসডেন। এরকম প্রাইমিং বা প্রবর্তয়িতা মেজাজ চনমনে করে বাড়ায় আত্মবিশ্বাস। মারসডেন বলেন স্মরণ করতে পারেন পূর্ব অভিজ্ঞতা, পূর্বের কোন সাফল্য। তিনি বলেন, পজিটিভ স্মৃতি স্মরণ করা আমাদেরকে পজিটিভ ইমোশনের অভিজ্ঞতা দেয়। মন ভাল করে। আত্ম বিশ্বাস বাড়ায়। পজিটিভ স্মৃতি আমাদের মগজকে ডোপামিন নিঃসরণে প্রবৃত্ত করে, এই নিউরো ট্রান্সমিটার আনন্দানুভূতি আনে মনে আর আমাদেরকে ভাবতে আর প্লান করতে সাহায্য করে। ইন্টার্ভিউর আগে এমন ডোপামিন নিঃসরণ মেজাজ ভাল করে, স্ট্রেস কমায়, দুশ্চিন্তা কমায় আর আত্মবিশ্বাস বাড়ায়।
৫। নার্ভাস এনার্জি পুড়িয়ে দিন
ইন্টারভিউর আগে কোন এক ব্যায়াম করুন ভার উত্তোলন, হাঁটা, বাইক চালানো। ঘাম ঝরুক, স্নায়ু শিথিল হোক। নার্ভাস এনার্জি পুড়াবার উপায় হল ব্যায়াম। যাতে ইন্টারভিউর সময় অতিরিক্ত উৎসাহ নিয়ে উপস্থিত না হন। পরিমিতি চাই বাড়াবাড়ি না।
ব্যায়ামে আরও লাভ যা তা হল বাড়তি এন্ডরফিন মেজাজ চনমনে করে আর মনের ধনাত্মক অবস্থা আনে।