ঘুমের প্রতি সমাজের উদাসীনতার কারণ ঐতিহাসিকভাবে বিজ্ঞান ঘুমের গুরুত্ব বুঝাতে ব্যর্থ হয়েছে। ঘুম গুরুত্বপূর্ণ হলেও জীববিজ্ঞানে এ ছিল এক বড় রহস্য। বিজ্ঞানের সমস্যা সমাধানের যত উন্নত উপায়/ উপকরণ– জেনেটিক্স, মলিকুলার বায়োলজি, উন্নত ডিজিটাল প্রযুক্তি– সব ঘুমের রহস্যভেদ করতে ব্যর্থ ছিল বহুকাল। নোবেলজয়ী ফ্রান্সিস ক্রিক যিনি ডিএনএ’র ডাবল হেলিক্স আবিষ্কার করেছিলেন, বিখ্যাত রোমান শিক্ষাবিদ ও বক্তা কুইন্টিলিয়ান, এমনকি সিগমুন্ড ফ্রয়েডের মত অনেক মহারথী ঘুমের এনিগমেটিক কোডের রহস্য উন্মোচনের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন।
ঘুম নিয়ে বিজ্ঞানের জানাশোনা না থাকার ব্যাপারটা একটি উদাহরণ দিলে পরিষ্কার হবে।
আপনার প্রথম সন্তানের এ পৃথিবীতে আগমনের দিনটি কল্পনা করুন। আপনি তখনো হাসপাতালে, ডাক্তার আপনার রুমে এসে বললেন, “অভিনন্দন, আপনার একটি ছেলে সন্তান হয়েছে এবং সে সুস্থ আছে। আমরা প্রাথমিক সব পরীক্ষানিরীক্ষা করেছি, সবকিছু ভালো আছে।”
ডাক্তার হাসিমুখে আশ্বস্ত করে দরজার দিকে পা বাড়ালেন। রুম থেকে বেরোনোর আগে ফিরে তাকালেন এবং বললেন, “শুধু একটা জিনিস মনে রাখবেন। ঠিক এ মূহুর্ত থেকে আজীবন, আপনার শিশু নিয়মিত একটা সময় পরপর প্রায় কোমায় চলে যাবে। কোন সময় হয়তো মনে হবে মরে গেল কি না। শরীর বিছানায় পড়ে থাকলেও তার মনের মধ্যে হয়তো চলছে হ্যালুসিনেশনের মত অদ্ভুত কিছু। জীবনের তিন ভাগের এক ভাগ তার কেটে যাবে এভাবে এবং আমার ধারণা নেই সে কেন এমন করবে বা এর প্রয়োজনীয়তাই বা কী। ভালো থাকবেন।”
ম্যাথিউ ওয়াকারের হোয়াই উই স্লিপ থেকে রূপান্তরিত
লেখা: ওমর ফারুক
সম্পাদনা: পুনম পালিত