স্ট্রোক শুধু বয়স্কদের হয়
বয়স বাড়ার সাথে সাথে স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে থাকে। তবে শিশু এবং কিশোরদের মাঝেও স্ট্রোক হতে পারে।
স্ট্রোক খুব বিরল রোগ
স্ট্রোক যতটা বিরল ভাবা হয় আসলে ততটা বিরল নয়। বরং খুব সাধারণ রোগ। বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ স্ট্রোক। দীর্ঘ সময়ের পঙ্গুত্বের অন্যতম প্রধান কারণও স্ট্রোক।
স্ট্রোক শুধু পুরুষে হয়
স্ট্রোকে পুরুষরা বেশি আক্রান্ত হলেও নারীদের মধ্যেও স্ট্রোকের হার কাছাকাছি। নারীদের মৃত্যুর তৃতীয় প্রধান কারণ স্ট্রোক। স্ট্রোক জাত, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে যে কারো হতে পারে।
স্ট্রোক হলে কেউ আটকাতে পারবে না। প্রতিরোধ করা যায় না।
অন্যান্য রোগের মত স্ট্রোকেরও পিছনেও প্রধান কিছু রিস্ক ফ্যাক্টর আছে। এসব ঝুঁকি এড়ানো গেলে স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা কমিয়ে আনা সম্ভব। উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে চর্বির পরিমাণ বেশি হলে, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস থাকলে স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনাও বাড়ে। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনে অভ্যস্ত হলে এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা গ্রহণ করলে এসব ঝুঁকি অনেক কমে আসে।
স্ট্রোকের সব সময় বিপদচিহ্ন বা আগাম লক্ষণ থাকে
স্ট্রোক কোন ধরনের পূর্ব সতর্ক সংকেত বা বিপদ চিহ্ন ছাড়া হতে পারে। এজন্য স্ট্রোক সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা থাকা জরুরী। কী কী লক্ষণ থাকলে জরুরীভাবে চিকিৎসক ও হাসপাতালের যাবেন তা সবার জানা থাকা চাই।
স্ট্রোকে শুধু ব্রেইন আক্রান্ত হয়
প্রাথমিকভাবে স্ট্রোক ব্রেইনে হলেও এর প্রভাব বিস্তার অনেক বেশি। মস্তিস্ক শরীরের অন্যান্য অংশের সাথে যুক্ত থাকায় এতে রোগী শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ব্রেইনে রক্ত জমাট বাঁধাই একমাত্র কারণ
ব্রেইনের রক্তনালীতে রক্ত জমাট বাঁধলে স্ট্রোক হতে পারে। আবার রক্তনালী ছিঁড়ে ব্লিডিং (রক্তপাত) হলেও স্ট্রোক হয়।
স্ট্রোকের উপসর্গ এমনিতেই চলে যায়, চিকিৎসা সবসময় নিতে হয় না
অনেক স্ট্রোক হয় ক্ষণস্থায়ী, আবার অনেক স্ট্রোক হয় দীর্ঘ সময় ব্যাপী। স্ট্রোকের স্থায়িত্বের জন্য অপেক্ষা না করে লক্ষণ উপসর্গ থাকলে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা দরকার। এসব পরিস্থিতিতে সময় অনেক মূল্যবান, দেরি হলে পঙ্গুত্ব, বিকলাঙ্গতা এবং মৃত্যুর মত অপূরণীয় ক্ষতি হতে পারে।
প্রেসার কম বা স্বাভাবিক থাকলে স্ট্রোক হয় না
উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন থাকলে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে। কিন্তু প্রেসার স্বাভাবিক বা কম থাকলেও স্ট্রোক হতে পারে বিশেষ করে বয়স্কদের ক্ষেত্রে।
এসপিরিন স্ট্রোক প্রতিরোধ করে বা এসপিরিন খেলে স্ট্রোক হয় না
এসপিরিন রক্ত জমাট বাঁধা প্রতিরোধ করে। কিন্তু সব স্ট্রোক রক্ত জমাট বাঁধার কারণে হয় এমন না। অন্যান্য কারণেও স্ট্রোক হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে এসপিরিন গ্রহণ করলে উলটা ঝুঁকি বাড়ে। এসব বিষয় নিজে সিদ্ধান্ত নেয়া কখনো উচিত নয়, ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া স্ট্রোকে বাধ্যতামূলক।
স্ট্রোক যা ভালো হওয়ার প্রথম সপ্তাহেই হয়ে যায়। এরপর আর অগ্রগতি হয় না।
সময় মত চিকিৎসা নিলে স্ট্রোকের রোগী দ্রুত সুস্থ হতে থাকে। প্রথম সপ্তাহে উন্নতি বেশি দৃশ্যমান হলেও স্ট্রোক থেকে রিকভারি কিন্তু এখানেওই থেমে থাকে না। রোগী ধীরে ধীরে ভালো হতে থাকে। কোন কোন ক্ষেত্রে মাস এমনকি বছর খানেক পরেও অগ্রগতি হতে থাকে। এমন পরিস্থিতিতে আশাহত না হয়ে চিকিৎসা সেবায় আস্থা রাখা দরকার।
স্ট্রোক হলেই প্যারালাইসিস হয়
স্ট্রোকের নানান জটিলতার মধ্যে প্যারালাইসিস অন্যতম। তবে সব ক্ষেত্রে স্ট্রোক হলেই প্যারালাইসিস হয় এমন না। কোন কোন ক্ষেত্রে কোন জটিলতা ছাড়াই পুরোপুরি সুস্থ হওয়া যায়।
স্ট্রোক হলে আর সেক্স করা যায় না
স্ট্রোক শরীরের ওপর বড় ধকল নিয়ে আসে। স্ট্রোক পরবর্তী জটিলতা স্বাভাবিক বা নিয়ন্ত্রণে আসলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন কখন থেকে সেক্সুয়াল একটিভিটিতে ফিরে যেতে পারবেন।
স্ট্রোক শুধু দিনে হয়
স্ট্রোক দিনে বা রাতে যেকোন সময় হতে পারে। ঘুমের মধ্যে বা সজাগ অবস্থায়, যেকোন পরিস্থিতিতে।
স্ট্রোকের লক্ষণ হঠাৎ প্রকাশ পায়
স্ট্রোক আকস্মিক দেখা দিতে পারে এ যেমন সত্য আবার কিছু লক্ষণ উপসর্গ আছে ধীরে ধীরে দেখা দিতে থাকে।
পরিবারের কারো স্ট্রোক হলে আমারও হবে
পারিবারিক ইতিহাসে স্ট্রোক থাকলে ঝুঁকির মাত্রা বাড়ে। কিন্তু পরিবারে রোগ ইতিহাস না থাকলেও অন্যান্য রিস্ক ফ্যাক্টর যেমন ধূমপান, মদ্যপান, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদি কারণে স্ট্রোক হতে পারে।
স্ট্রোক হলে ব্যায়াম করা ঠিক না
স্ট্রোকের রোগীদের দ্রুত আরোগ্য লাভের অন্যতম উপায় ব্যায়াম করা। শারীরিক সামর্থ্য, ভারসাম্য ও সার্বিক কাজকর্মের জন্য ব্যায়াম খুব উপকারী। এজন্য প্রয়োজনে স্বাস্থ্য সেবাদানকারীর সাথে পরামর্শ করবেন।