মানবশরীরে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনে রাসায়নিক বিক্রিয়া চলতে থাকে এবং এর ফলে বিভিন্ন পদার্থের পাশাপাশি কিছু পরিমানে বিষাক্ত পদার্থ ও তৈরি হয়,যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এইসব পদার্থের শরীর থেকে নিষ্কাশনের কয়েকটি পদ্ধতির একটি হলে মূত্রের মাধ্যমে নিষ্কাশন। নিষ্কাশনপদ্ধতির প্রয়োজনীয় অঙ্গগুলোর মধ্যে একটি হলো মূত্রনালী,যার মাধ্যমে বিষাক্ত পদার্থ বহনকারী মূত্র শরীর থেকে অনায়াসে বাহির হয়ে যায়। কিন্তু বিপত্তি বাধে যখনি মূত্রনালিতে কোন আঘাত হয়। সাধারণত মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের মধ্যে মূত্রনালীর আঘাত বেশি পরিলক্ষিত হয়।
কারণ
-Saddle Injury(দুই পায়ের মাঝখানে আঘাত,যেমন বাইসাইকেল বা কোন লাঠি দ্বারা,ঘোড়সওয়ার অবস্থায়,ইত্যাদি)
-কোন ভারী বস্তু দ্বারা আঘাতপ্রাপ্ত হওয়া
-দূর্ঘটনায় Pelvic Fracture(কোমড়ের সামনের দিকের হাড়ে ভেঙ্গে যাওয়া)
-মূত্রনালীতে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে নল পড়ানোর সময়
-জোর করে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের সময় মহিলারা আঘাতপ্রাপ্ত হতে পারেন
-Obstructed Labour(সন্তান জন্মদানের সময় স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সময় লাগা)
লক্ষণ
মূত্রনালিতে আঘাতের ফলে মূত্রনালি থেকে মূত্র যা বিষাক্ত পদার্থসমৃদ্ধ আশাপাশের অঙ্গ কিংবা মাংসপেশির ক্ষতি করতে পারে,নিম্নোক্ত মাধ্যমে তা বোঝা যায়ঃ
-লজ্জ্বাস্থান ফুলে যাওয়া
-প্রদাহ হওয়া
-তলপেটে ব্যাথা অনুভূত হওয়া।
এছাড়া আঘাতের ফলে নিম্নোক্ত লক্ষ্মণ দেখা যায়ঃ
-মূত্রত্যাগ করতে না পারা
-মুত্রথলিতে মূত্র জমা হয়ে তলপেটে তীব্র ব্যাথা
-মূত্রে রক্তের উপস্থিত
-এ ছাড়াও লালচে বা কালচে দাগ দেখা যেতে পারে।
মূত্রনালিতে মাঝারী ধরনের আঘাত পাওয়ার পর সুস্থ হওয়ার পর দেখা যায় মূত্রনালী সরু হয়ে গেছে। এ ছাড়া বড় ধরনের আঘাতের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ মূত্রনালি মাঝখান দিয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে।
নির্ণয়
সাধারণত চিকিৎসকগণ লক্ষণ,শারিরীক পরীক্ষা এবং নল প্রবেশ করানোর সময় বাধা পাওয়ার মাধ্যমে বুঝতে পারে। তবুও নিশ্চিত হওয়ার জন্য ডাইয়ের মাধ্যমে এক্স-রে করানো হয়, এছাড়া বর্তমানে আধুনিক অনেক পরীক্ষা এসেছে।
করণীয়
এ ধরণের আঘাত পেলে বা সন্দেহ হলে খুব দ্রুত নিকটস্থ রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করবেন। এই ধরনের আঘাতে জরুরি অপারেশনের ও প্রয়োজন হতে পারে। এবং সবচেয়ে ভালো হয় যদি একজন Urologist (মূত্রনালীরোগ বিশেষজ্ঞ ও সার্জন) এর পরামর্শ নেন।